রিয়াদুন্নবী রিয়াদ:
রংপুর অঞ্চলের সাংবাদিকতার মঞ্চে উজ্জ্বল এক নক্ষত্র সরকার মাজহারুল মান্নান। যমুনা টেলিভিশনের রংপুর ব্যুরো প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন তিনি, পাশাপাশি রংপুর রিপোর্টার্স ক্লাব ও রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের (আরপিইউজে) সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন। দীর্ঘদিন ধরে অনুসন্ধানী ও সাহসী সাংবাদিকতায় নিজের দৃঢ় অবস্থান তৈরি করেছেন, যা তাকে যেমন প্রশংসিত করেছে, তেমনি নানা চ্যালেঞ্জের মুখেও ফেলেছে।
সাংবাদিকতার মূল ভিত্তি হলো সত্যের সন্ধান ও তথ্যের শক্তি। সরকার মাজহারুল মান্নান এই নীতিতেই অটল রয়েছেন। দুর্নীতি, অনিয়ম, সামাজিক অসঙ্গতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো বিষয়গুলো নিয়ে তার অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের কারণে সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করেছেন। তবে এসব প্রতিবেদন অনেক সময় ক্ষমতাধর মহলের স্বার্থের বিপরীতে চলে গেছে, ফলে নানা প্রতিকূলতার মুখোমুখি হয়েছেন তিনি।
২০২৩ সালে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রচারের পর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়, যা সাংবাদিক মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করার প্রচেষ্টা হিসেবে এই মামলাকে দেখেছেন দেশের সাংবাদিক সমাজ। রংপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সাংবাদিকরা এই হয়রানিমূলক মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও কর্মসূচি পালন করেন। কিন্তু এসব বাধা সরকার মাজহারুল মান্নানকে তার দায়িত্ব পালনে টলাতে পারেনি। বরং তিনি আরও সাহসিকতার সঙ্গে সাংবাদিকতার আদর্শ ধরে রেখেছেন।
সরকার মাজহারুল মান্নানের পিতা ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ মো. আব্দুস ছাত্তার সরকার। গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার কিসামত সদর গ্রামের এই গুণী ব্যক্তি তার সততা ও শিক্ষার আলো ছড়িয়ে গেছেন, যা এখনো স্মরণীয়। বাবার দেখানো পথেই এগিয়ে চলেছেন মাজহারুল মান্নান। প্রতিবছর তার বাবার মৃত্যুবার্ষিকীতে বিশেষ স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিল আয়োজন করা হয়, যেখানে শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা অংশ নেন।
সরকার মাজহারুল মান্নান শুধু নিজের পেশাগত দায়িত্বই পালন করেন না, তিনি সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায়ও অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন। রংপুর রিপোর্টার্স ক্লাব ও সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতৃত্বে থেকে তিনি সাংবাদিকদের ন্যায্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।
তরুণ প্রজন্মের সাংবাদিকদের প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনাও রয়েছে তার। এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে আগামী দিনের সাংবাদিকরা বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ পাবেন এবং সত্যনিষ্ঠ সাংবাদিকতার চর্চাকে আরও এগিয়ে নিতে পারবেন।
সরকার মাজহারুল মান্নান শুধু একজন সাংবাদিক নন, তিনি সাহস, সততা ও ন্যায়ের প্রতীক। সত্যের পথে অবিচল থেকে তিনি সাংবাদিকতার পবিত্র দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। সব প্রতিকূলতাকে জয় করে তিনি গণমাধ্যমকে আরও শক্তিশালী করার যে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন, তা সাংবাদিকতা জগতে এক অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।