নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে চীন সম্পূর্ণ প্রস্তুত। তিনি জানান, এই প্রকল্পের মাধ্যমে তিস্তা পাড়ের মানুষের জীবনমান উন্নয়ন, নদী শাসন এবং কৃষি উন্নয়নের সুযোগ সৃষ্টি হবে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের ওপর নির্ভর করছে।
রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, বাংলাদেশ সরকার চাইলে চীন দ্রুত প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু করতে পারে। তিনি উল্লেখ করেন, ২০২১ সালে বাংলাদেশ সরকার চীনের কাছে সহযোগিতার অনুরোধ জানায়। পরবর্তীতে সম্ভাব্যতা যাচাই শেষে ২০২৩ সালে চীনের পক্ষ থেকে একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। তবে এরপর থেকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আর কোনো সিদ্ধান্ত জানা যায়নি।
তিস্তা নদী বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নদী হলেও প্রতি বছর শুষ্ক মৌসুমে এতে পানি সংকট দেখা দেয় এবং বর্ষা মৌসুমে ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়। তিস্তা মহাপরিকল্পনার মূল উদ্দেশ্য হলো নদী শাসন, সেচ ব্যবস্থা উন্নতকরণ এবং দুই তীরের মানুষের জীবনমান উন্নত করা। চীনা রাষ্ট্রদূত মনে করেন, দ্রুত প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হলে বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে।
বিশ্লেষকদের মতে, চীনের সহযোগিতায় প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে তিস্তা নদী নিয়ন্ত্রণে আসবে এবং কৃষি ও পর্যটন খাত বিকাশ লাভ করবে। তবে এই প্রকল্প বাস্তবায়নে কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। ভারত ও বাংলাদেশ উভয়ের জন্যই তিস্তা একটি গুরুত্বপূর্ণ নদী, ফলে এই প্রকল্প বাস্তবায়নে আঞ্চলিক সমন্বয় দরকার হতে পারে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ইতোমধ্যে চীনা কোম্পানির সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক নবায়ন করেছে। এর মাধ্যমে দুই বছরের মধ্যে প্রকল্পের চূড়ান্ত নকশা ও প্রাক্কলন তৈরি করা হবে। তবে প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকার কী সিদ্ধান্ত নেয়, সেটিই এখন মূল বিষয়।
চীনা রাষ্ট্রদূতের মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকার কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এটি বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ, যা দেশের অর্থনীতি ও অবকাঠামো উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।