নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংস্কারের প্রতি পূর্ণ সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে ইতালি। মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহম্মদ ইউনূসের সঙ্গে এক বৈঠকে ইতালির পররাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা মন্ত্রণালয়ের ভাইস-মিনিস্টার মারিয়া ত্রিপোদি এ আশ্বাস দেন।
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে ত্রিপোদি বলেন, “আমরা আশা করি আপনি সংস্কারের মাধ্যমে সফল হবেন। প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি যেমন ইউএনজিএ-তে আপনাকে উল্লেখ করেছেন, আপনি সর্বদা আমাদের উপর নির্ভর করতে পারেন।”
তিনি আরও বলেন, “ইতালি ও বাংলাদেশ খুব কাছাকাছি। অনেক বাংলাদেশি ইতালিতে বসবাস করেন এবং তারা আমাদের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। আমরা বাংলাদেশকে অবৈধ অভিবাসন বন্ধে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করার আহ্বান জানাই।”
আইনি অভিবাসন সম্প্রসারণে জোর
বৈধ অভিবাসনের গুরুত্ব তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশ মানব পাচার বন্ধে কঠোর পরিশ্রম করছে। আমরা আনুষ্ঠানিক চ্যানেলের মাধ্যমে আরও দক্ষ কর্মী বিদেশে পাঠানোর উদ্যোগ বাড়াচ্ছি।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করা এবং রাজনৈতিক ব্যবস্থায় জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধারের মতো বড় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার চেষ্টা করছি।”
জবাবে ত্রিপোদি বাংলাদেশকে তার সরকারের “পূর্ণ সমর্থন” দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
বাংলাদেশে ইতালির বিনিয়োগ আগ্রহ
বাংলাদেশে ইতালির বিনিয়োগ প্রসঙ্গে ত্রিপোদি বলেন, “টেক্সটাইল, জ্বালানি ও প্রতিরক্ষা খাতে সহযোগিতার বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। ইতালির অনেক কোম্পানি বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী।”
প্রধান উপদেষ্টা ইতালির ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আমরা চাই ইতালির কারখানাগুলো বাংলাদেশে স্থানান্তরিত হোক। পাশাপাশি, দুই দেশের যুব সমাজকে আরও দক্ষ করে তুলতে বিনিময় কর্মসূচি চালু করা দরকার।”
ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে প্রথম উচ্চ পর্যায়ের সফর
প্রধান উপদেষ্টা মারিয়া ত্রিপোদির সফরকে “ঐতিহাসিক” আখ্যা দিয়ে বলেন, “জুলাই মাসের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর এটি আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সময়। আমরা রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে কাজ করছি।”
গত বছরের আগস্টে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর এটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোনো দেশ থেকে প্রথম মন্ত্রী পর্যায়ের সফর। বৈঠকে এসডিজি বিষয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মোর্শেদসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।