রংপুর প্রতিনিধি:
বিপুল উৎসাহ, উদ্দীপনা ও গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে রংপুরের গঙ্গাচড়ায় উদযাপিত হলো মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ, মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা, আলোচনা সভাসহ দিনব্যাপী নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে দিবসটি উদযাপন করা হয়।
সকালে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গঙ্গাচড়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে দিনের কর্মসূচি শুরু হয়। এতে সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা, মুক্তিযোদ্ধা, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং সর্বস্তরের মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
এছাড়াও গঙ্গাচড়া উপজেলা প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকেও মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক, সদস্য সচিব সহ অন্যান্য সদস্যরা এদিন সকালে গঙ্গাচড়া উপজেলা শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। তারা মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী শহীদদের স্মরণ করে বলেন, "বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য যারা প্রাণ উৎসর্গ করেছেন, তাদের এই ত্যাগ জাতি চিরকাল কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করবে। প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দ বলেন, "সাংবাদিকরা জাতির দর্পণ। স্বাধীনতার সঠিক ইতিহাস সংরক্ষণ ও প্রচারে আমাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে।
এরপর গঙ্গাচড়া স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ ও শারীরিক কসরত প্রদর্শনী। এতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, পুলিশ, আনসার, গ্রাম পুলিশসহ বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যরা অংশ নেন। স্বাধীনতা দিবসের এই বিশেষ আয়োজনে শিক্ষার্থীদের মনোমুগ্ধকর ডিসপ্লে দর্শকদের মুগ্ধ করে।
দিবসটি উপলক্ষে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে আয়োজিত হয় এক আলোচনা সভা। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)মাহমুদ হাসান মৃধা বলেন, মহান স্বাধীনতা দিবস আমাদের গৌরবের দিন। মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি। আমাদের দায়িত্ব হলো এই অর্জনকে সমুন্নত রাখা।
সংবর্ধিত মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, "১৯৭১ সালে আমরা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে দেশের স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছি। তরুণ প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশ গঠনে এগিয়ে আসতে হবে।"
সারাদিন গঙ্গাচড়ার বিভিন্ন স্থানে ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ। প্রত্যেক মানুষের চোখে ছিল স্বাধীনতার আনন্দ ও গর্বের অনুভূতি। স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে অংশ নেওয়া এক শিক্ষার্থী বলছিলেন, "আমরা আজকের এই দিনটি স্বাধীনতার চেতনা ধারণ করে উদযাপন করেছি। মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগ থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে আমরা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।"
মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের এই আয়োজন গঙ্গাচড়ার মানুষের হৃদয়ে স্বাধীনতার চেতনাকে আরও সুদৃঢ় করেছে।